জেনে নিন রমজানে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে কী খাবার খাবেন | Healthy food in Ramadan
রমজান মাসে যতটা সম্ভব সাধারণ ও স্বাভাবিক খাবার খাওয়াই উচিত। সারাদিনের রোজার পর ইফতারে অনেক কিছুই খেতে ইচ্ছে করে। তবে যতদুর সম্ভব ভাজাপোড়া ও ভারী খাবার গুলোকে এড়িয়ে চলতে হবে।আসুন জেনে নেই ভাজাপোড়া ও ভারী খাবার খেলে কী সমস্যা হতে পারে:-
১। বিভিন্ন রকম পেটের সমস্যা যেমন - পেটব্যাথা, পেটফাঁপা ইত্যাদি
২। মাথাব্যথা, মাথাঘোরা
৩। দুর্বলতা
৪। অবসাদ
৫। ওজন বেড়ে যাওয়া
৬। আলসার, এসিডিটি ও হজমে সমস্যা ইত্যাদি
তাই সুস্থ শরীরে পুরো রোজার মাস ভালো থাকার জন্য একটা ব্যালেন্স ডায়েট বা সুষম খাবারের দরকার। রোজায় শরীরকে হাইড্রেট রাখতে প্রচুর পানি, মৌসুমি ফল ও সবজির জুস, ঠাণ্ডা খাবার ও আঁশ জাতীয় খাবার রাখতে হবে। অতিরিক্ত চিনিযুক্ত জুস বা খাবার না খেয়ে প্রাকৃতিক খাবার থেকে অ্যানার্জি নেয়াই ভালো।
চা, কফির মাত্রা কমাতে হবে। তা না হলে পানিশূন্যতা, কোষ্ঠকাঠিন্য ও ঘুমের সমস্যা হতে পারে। ভাঁজাপোড়া ও অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত তৈলাক্ত খাবার বেশি খেলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে তাই এসব যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো।
সেহরির খাবার:
রোজায় সেহরির সময় অতিরিক্ত খাবার খেয়েও সারা দিনের ক্ষুধা মেটানোও সম্ভব না। কিন্তু খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে একটু খেয়াল রাখলেই ক্ষুধাকে বিলম্বিত করা সম্ভব। আঁশযুক্ত খাবার এবং খাবারগুলো ভুনা না হয়ে কম তেল মশলার ঝোলের তরকারি হলে সবচেয়ে ভালো হয়। তাহলে সারাটা দিন ভালো যাবে।
আরো পড়ুন:
খাবারের এই চার্টটি ফলো করতে পারেন:
⦁ লাল চালের ভাত এক কাপ
⦁ সবজি যেমন লাউশাক, মিষ্টিকুমড়া, শসা, পটল, ঝিঙে, কচুশাক, কচু ইত্যাদি
⦁ ১ কাপ, মাছ বা মুরগি ১ টুকরা
⦁ ডাল আধা কাপ
⦁ সঙ্গে দই বা লো ফ্যাট দুধ ১ কাপ
এছাড়া কেউ ভাত খেতে না চাইলে রুটি, চিড়া-দই, কর্ন ফ্ল্যাক্স-দুধও খেতে পারেন। অনেকেই সেহেরির সময় একসঙ্গে বেশি পানি খেয়ে ফেলেন, এটা করা যাবে না। ইফতারের পর থেকে রাত পর্যন্ত বারে বারে অল্প অল্প করে পানি বা অন্যান্য তরল খেয়ে দেহকে আর্দ্র রাখতে হবে।
ইফতারের খাবার:
স্বাভাবিকভাবেই সারাদিন রোজার পর রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে যায়। সে জন্য ইফতারের সময় শরীর, ব্রেইন ও স্নায়ুকোষ খাবারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক শক্তির জোগান চায়। তাই ইফতারের খাবারটা হতে হবে ঠাণ্ডা ও সহজে হজম হয় এমন।
খাবারের এই চার্টটি ফলো করতে পারেন:
⦁ খেজুর ৩-৪টি
⦁ হালকা গরম সবজি
⦁ মাশরুম
⦁ চিকেন বা ওটস স্যুপ ১ বাটি
⦁ সেদ্ধ ছোলা আধা বাটি, সাথে মুড়ি ও খেতে পারেন
⦁ ১টি সেদ্ধ ডিম
⦁ যে কোনো ফলের জুস যেমন আখের রস, কচি ডাবের পানি
⦁ দইয়ের লাচ্ছি, কয়েক ধরনের ফল ও দই মিলিয়ে তৈরি মিক্সড জুস ও খেতে পারেন
মাগরিবের নামাজের পর:
⦁ কম মিষ্টির পায়েস
⦁ পুডিং বা চিড়া-দই অথবা মিক্সড ফল দিয়ে ওটস ১ বাটি
⦁ প্যানকেক
⦁ ফলের কাস্টার্ড অথবা খেতে পারেন বেশি করে সবজি দিয়ে নুডুলস, চিকেন মোমো
⦁ মুরগির হালিম ও খেতে পারেন
রাতের খাবার:
রোজার মাসে রাতের খাবারটাও সেহেরির মতো কিছুটা হালকা থাকতে হবে।
⦁ ভাত ১ কাপ বা রুটি ২টি
⦁ মাছ বা মুরগি ১ টুকরো
⦁ সবজি ১ কাপ ও সালাদ ১ বাটি
যদি কেউ একটু বেশি ইফতার করে ফেলেন সে ক্ষেত্রে রাতে ভাত বা ভারী কিছু না খেয়ে হাল্কা কিছু খেতে পারেন। সেটা কিছু ফল ও দুধ বা দই হতে পারে।